MY LIFE MY STORY BENGALI PART-4

আজ অনেকদিন পর ছোটবেলার একটা গল্প শেয়ার করব আপনাদেরকে, ভালো লাগলে নিশ্চয়ই লাইক শেয়ার করবেন। মনের অতলে অনেক কিছু লুকিয়ে থাকে। আমরা কখনো তা ব্যক্ত করতে পারিনা কিন্তু যখন আমরা একটু বুড়ো হয়ে যাই চিন্তা করি জীবনটাকে নিয়ে তখন ছোটবেলার ওই ছোট ছোট কথাগুলো আমাদের কাছে গল্পের আকারে ধরা দেয়। তেমনি কোন এক ছোটবেলার গল্প আপনাদেরকে শেয়ার করব।

এ নিয়ে জীবনে আমি অনেকবার ভেবে দেখেছি কিন্তু সেদিনের অভিজ্ঞতা থেকে কতটুকু রপ্ত করেছি, আমার আজও সন্দেহ হয়। গল্পের ছলে সে কথাগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করব।

আমরা যেখানে থাকতাম আমাদের বাড়ি। এটা ছোট মেটো টিলার উপরে ছিল। মেইন সড়কের লাগোয়া রাস্তা। আর রাস্তা ছিল কাঁচা রাস্তা। সাইকেল গাড়ি নিয়ে উঠা একটু কষ্ট কর ছিল কারো না কারো সাহায্যের দরকার হতো। একদিন এমন হলো আমি তখন কলেজে পড়ি সম্ভবত ফার্স্ট ইয়ার। ওই রাস্তা দিয়ে আমি আসছিলাম তখন সাইকেলে একটা ব্যাটারি নিয়ে আমারই পাড়ার পাঞ্জাবি ভদ্রলোক উঠছিলেন আমি উনার পিছনে ছিলাম । তখন ও পর্যন্ত কারেন্ট ছিল না আমাদের ঐ পাড়াতে। ওখানটাতে ব্যাটারি দিয়ে টিভি দেখা হতো তাই সপ্তাহে একবার ব্যাটারি চার্জ করার জন্য নিয়ে যেতে হতো আর নিয়ে আসতে হতো। যখন উনি উঠছিলেন তখন আমি চিন্তা করতে পারেনি। আমার মধ্যে একটু ইগো ছিল যে হয়তো আমাকে বলবে সাহায্য করার জন্য আমি সাহায্য করবো। কিন্তু তখনকার মত উনি আমাকে সাহায্য করতে বলেননি? হয়তোবা আমার উচিত ছিল বিনা বলায় ঊনাকে সাহায্য করা। কিন্তু আমার আত্ম-অভিমানের জন্য সেটা হয়তো আমি করে উঠতে পারিনি।
তাদের বাড়িতে আমরা টিভি দেখতে যেতাম সেদিন থেকে আমার ইমেজটা উনার কাছে খুব বাজে হয়ে গিয়েছিল। যার প্রতিফলনটা আমি তখন বুঝতে পেরেছিলাম। তারপর প্রায়ই যখন কাউকে আমি কিছু ভারি জিনিষ বা ঠেলা নিয়ে উঠতে দেখতাম, আমি স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাহায্য করতাম। সেদিনের অভিজ্ঞতা আমাকে শিখিয়েছিল।

কিন্তু একটা ছোট্ট ছেলের শিশুসুলভ মনে অভিমান একটু থাকতেই পারে তুমি যখন আমাকে বলনি তখন তোমাকে আমি কেন সাহায্য করব! সত্য মিথ্যার বিচার তো আপনারা করবেন। হয়তোবা আপনাদের সামনেও এমন ঘটনা কখনো কখনো ঘটে ছিল যার সাহায্যর প্রয়োজন ছিল কিন্তু কোনো কারনে তা করা হয়নি। আমরা চেয়েও কখনো করতে পারি না।

আজও আমি গাড়ি নিয়ে বেরোলে সেদিনের ছোটবেলার কথা মনে পড়ে। কেউ যদি রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে আমি লিফট দিই নিঃসন্দেহে। আমার ছোটবেলার কথাটা বারবার মনের মধ্যে চলে আসে, ভদ্রলোক আজ বেচেঁ নেই। সম্ববতঃপাঞ্জাবে নিজেদের রাজ্যে গিয়ে মারা গেছেন। তাদের ও খুব বড়ো ট্রাজেডি আছে পরে আরো একদিন সে গল্প বলবো।

ইগো সমস্যার ছোট ঘটনাটি বলতে চাইছি, আমরা যেখানে থাকতাম সারাউণ্ডেড বাই টি গার্ডেন্স। আর যারা টিগার্ডেনে কাজ করত বাবু বা চা বাগানের লেবারদের সাহেব। তারা নিজেদেরকে খুব বড় বলে মনে করত। আমাদের বাগানের সাথে কোন সম্পর্ক ছিল না। তাই তাদেরকে কখনো ধার ধরতাম না। বাগানের সাহেবরা বা বাবুরা বলতে, লেবারদের বাবুরা বা সাহেব এমন একটা ভাব দেখাতো যা বলা মুশকিল। তার জন্য হয়তো এই পাঞ্জাবি ভদ্রলোকের ইগো ছিল যেহেতু উনি চা বাগানের ফাক্টরি মেকানিক্স বাবু ছিলেন। তিনি কখনো সেদিন তাই হয়তো আমাকে হেল্প করতে বলেননি তার আত্মঅহকারের জন্য? আর আমারও ইগো ছিল যে আমি তোমার টি গার্ডেনের লেবার নই। তাই সেদিনের মতো ইচ্ছে ছিলো কিন্তু হেল্প করতে পারিনি।

নিজের দেশের মানুষ যদি এমন করতো তবে ব্রিটিশরা তখনকার ভারতীদের সাথে কেমন ব্যবহার করতো ভাবলে হয়তো ভয় লাগবে। আমার রক্তে স্বাধীনতা সেনানীর তেজ ছিল আমরা ফ্রিডম ফাইটার এর বংশধর। বলা ভালো ভারতবর্ষের স্বাদিনতা সংগ্রামের বিউগল ঢাকা থেকে প্রথম বেজে উঠে ছিল। গর্ব করে বলতে পারি আমার পূর্বপুরুষ, আমার পরিবার স্বাধীনতা অন্দোলনের সহভাগী ছিলেন ।

জীবনে ইগো ফাইট টা খুব বড় ব্যাপার সেখানে কেউ কখনো হারতে চায়না। তাই হয়তোবা একদিন ভারতীয় শহীদের রক্তে স্নাত হয়ে দেশ স্বাধীন হয়ে ছিল। আমরা ভারতীয় এখন স্বাধীন দেশের নাগরিক বলে গর্ব করি।

 

MY LIFE MY STORY BENGALI PART-4

Categories: Blog in Bengali

0 Comments

Leave a Reply

Avatar placeholder

Your email address will not be published. Required fields are marked *